রংপুরে একযুগ পর শিবির নেতা আশিকুর রহমান হত্যার বিচার চেয়ে আওয়ামী লীগের ২২৪ জনসহ আরো অজ্ঞাত ৫০ থেকে ৭০ জনের নামে মামলা করেছে নিহতের বাবা আফতাব উদ্দিন। গত ৮ মার্চ রংপুরের মিঠাপুকুর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক। মিঠাপুকুর উপজেলার ইমাদপুর গ্রামের আফতাব উদ্দিনের ছেলে নিহত আশিকুর রহমান।
বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে এ তথ্য জানান ওসি। তিনি বলেন, দীঘ কয়েক বছর পর এই হত্যা মামলাটি করছেন নিহতের পিতা। মামলার আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের নায়েবে আমীর দেলোয়ার হোসেন সাঈদির বিরুদ্ধে ফাঁসি রায়ের প্রতিবাদে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে বাংলাদেশ জামায়াতী ইসলামী।হরতালের সমর্থনে মিঠাপুকুর জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেন।
এসময় পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিকলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা এইচ এন আশিকুর রহমানের নির্দেশে হামলা চালায়। হামলার এক পর্যায়ে আশিকুর রহমান নামে এক তরুণ গুলিবিদ্ধ হন এবং মহাসড়কেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এতে অন্তত ৫০/৬০ জন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী গুরতর আহত হন।আহতদের মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। পরে গুরুতর আহতরা উন্নত চিকিৎসা নিতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, সন্তান হারানোর শোকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় মিঠাপুকুর থানায় মামলা করতে গেলে থানায় মামলা নিতে অসম্মতি প্রকাশ করে। যার কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে। সেই থেকে দীঘ ১২ বছর পর মামলাটি করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট পরবর্তি আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ৬ মাস পর ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আওয়ামী লীগের ২২৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ৫০ থেকে ৭০ জনের নামে মামলা করেন নিহতের বাবা আফতাব উদ্দিন।মামলায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমানকে ১ নম্বর আসামি, তার ছেলে আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির নেতা রাশেক রহমানকে ২ নম্বর আসামি এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি জাকির হোসেন সরকার ৩ নম্বর আসামি করে ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিকলীগের ২২৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরো ৫০ থেকে ৭০ জনের নামে মামলা দায়ের করেন তিনি।
এ ব্যাপারে মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। অতিদ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।