আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প “সতেজ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে” রয়েছেন বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের চিকিৎসক। মেডিকেল পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় মানসিক সক্ষমতা পরীক্ষায় তিনি পূর্ণ নম্বরও পেয়েছেন।
এছাড়া কিছু ত্বক সমস্যা ও অতীত স্বাস্থ্য ইতিহাস রয়েছে ট্রাম্পের, তবে সেগুলো ভালোভাবে নিয়ন্ত্রিত। মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের ওজন কিছুটা কমেছে এবং তিনি বর্তমানে ওভারওয়েট শ্রেণিতে রয়েছেন, তবে ‘অবস’ নন।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ওয়াশিংটন ডিসির কাছাকাছি ওয়াল্টার রিড সামরিক হাসপাতালে ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্সিয়াল মেয়াদের প্রথম বাৎসরিক স্বাস্থ্যপরীক্ষা সম্পন্ন হয় গত শুক্রবার। সেখানে তার হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, স্নায়ু এবং অন্যান্য শারীরিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যকারিতা স্বাভাবিক পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ডা. শন বারবাবেলা। তিনি যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর একজন অভিজ্ঞ জরুরি বিভাগীয় চিকিৎসক।
গত বছরের জুলাইয়ে পেনসিলভানিয়ার একটি নির্বাচনী সমাবেশে ট্রাম্পের ওপর গুলির চেষ্টা হয়েছিল। সে সময় গুলি তার ডান কান ছুঁয়ে যায়। তার চিকিৎসক জানিয়েছেন, এখনও সেই গুলির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে তার কানে, তবে এটি তার স্বাস্থ্য বা শারীরিক সক্ষমতায় প্রভাব ফেলেনি।
চিকিৎসক ক্যাপ্টেন শন বারবাবেলা একটি স্মারকলিপিতে বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাস্থ্য এখনও চমৎকার, হৃদরোগ, ফুসফুস, স্নায়বিক এবং সাধারণ শারীরিক কার্যকারিতাও তার শক্তিশালী।”
৭৮ বছর বয়সে ট্রাম্প চলতি বছরের জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং দায়িত্বগ্রহণের সময় তিনিই সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট ছিলেন, যদিও তার পূর্বসূরী জো বাইডেন যখন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে বিদায় নেন তখন তার বয়স ছিল ৮২ বছর।
সংবাদমাধ্যম বলছে, চিকিৎসা পরীক্ষার অংশ হিসেবে ট্রাম্পকে মন্ট্রিয়াল কগনিটিভ অ্যাসেসমেন্ট (মকা) নামে পরিচিত একটি মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা নেওয়া হয়—যেখানে তিনি ৩০ স্কোরের মধ্যে ৩০ পেয়েছেন। এই পরীক্ষায় স্মরণশক্তি, মনোযোগ, ভাষা ও চিন্তা-ক্ষমতা মূল্যায়ন করা হয়।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমি সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়েছি। আমার মনে হয় আমি বেশ ভালো অবস্থায় আছি—একটা ভালো হৃদয়, ভালো আত্মা।”
এই প্রায় পাঁচ ঘণ্টার স্বাস্থ্যপরীক্ষায় ট্রাম্পের রক্ত পরীক্ষা, হৃদযন্ত্রের আল্ট্রাসাউন্ড, স্নায়বিক কার্যক্ষমতা, মস্তিষ্কের অবস্থা এবং রিফ্লেক্স পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত ছিল। রিপোর্টে বলা হয়েছে, তার মধ্যে ডিপ্রেশন বা উদ্বেগের কোনও লক্ষণ নেই।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার ত্বকে কিছু ছোটখাটো সূর্যরশ্মিজনিত ক্ষতি এবং কিছু বিনাশংকেতযুক্ত ত্বকের ক্ষত রয়েছে, যেগুলো উদ্বেগের কিছু নয়।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ ও ত্বকের চিকিৎসার পাশাপাশি হৃদযন্ত্রের সুস্থতার জন্য ট্রাম্প নিয়মিত কয়েকটি ওষুধ গ্রহণ করেন। চিকিৎসা ইতিহাস অনুযায়ী তিনি একসময় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছিলেন, তার রোসেসিয়া নামের একটি ত্বকের সমস্যা রয়েছে এবং অতীতে সত্প্রকৃতির কোলন পলিপ ছিল।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রাম্পের বর্তমান ওজন ১০১ কেজি (২২৪ পাউন্ড) এবং উচ্চতা ৬ ফুট ২.৫ ইঞ্চি। ২০১৯ সালে তার ওজন ছিল ২৪৩ পাউন্ড অর্থাৎ ওজন কিছুটা কমেছে। বিএমআই অনুসারে, তিনি বর্তমানে “ওভারওয়েট” শ্রেণিতে থাকলেও আর “অবস” নন।
চিকিৎসক জানান, তার হাঁড় ও মাংসপেশি সম্পূর্ণভাবে সচল এবং তিনি সাধারণত শারীরিকভাবে সক্রিয়, বিশেষ করে গলফ খেলে থাকেন নিয়মিত।
এসআই