আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিলিয়ন ডলারের তহবিল বন্ধ ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ফেডারেল কোর্টে মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম অভিজাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি।
স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার (২১ এপ্রিল) দায়ের করা এই মামলা এমন এক সময়ে করা হলো, যখন হার্ভার্ড সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের একটি দাবি-সংবলিত তালিকা প্রত্যাখ্যান করেছে। খবর বিবিসির।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতোমধ্যেই হার্ভার্ডের জন্য নির্ধারিত ২.২ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১.৭ বিলিয়ন পাউন্ড) ফেডারেল তহবিল স্থগিত করেছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির করমুক্ত মর্যাদা বাতিলের হুমকিও দিয়েছেন।
হার্ভার্ড প্রেসিডেন্ট অ্যালান এম. গারবার এক চিঠিতে বলেন, “সরকারের এই মাত্রাতিরিক্ত হস্তক্ষেপের পরিণতি হবে গুরুতর ও দীর্ঘস্থায়ী।”
সোমবার রাতে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, “হার্ভার্ডের মতো প্রতিষ্ঠানে ফেডারেল সাহায্যের নামে করদাতাদের অর্থে অতিরিক্ত বেতনভোগী আমলাদের পুষে রাখার দিন শেষ। এই সাহায্য কোনো অধিকার নয়, এটা একটি সুযোগ—যা হার্ভার্ড পূরণে ব্যর্থ।”
গারবার জানান, তহবিল স্থগিতের কারণে শিশু ক্যানসার, অ্যালঝেইমার ও পারকিনসনস রোগ নিয়ে চলমান গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ব্যাহত হচ্ছে।
মামলায় বলা হয়েছে, “এই মামলার মূল বিষয় হলো, কিভাবে সরকার ফেডারেল অর্থ বন্ধ করে দিয়ে হার্ভার্ডের একাডেমিক সিদ্ধান্তে প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে।”
এছাড়াও, ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি হার্ভার্ডের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির সক্ষমতাকেও হুমকি দিয়েছে।
ইহুদি ধর্মাবলম্বী গারবার স্বীকার করেছেন যে হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিরোধিতার সমস্যা রয়েছে, তবে তিনি এ বিষয়ে কাজ করতে দুটি টাস্কফোর্স গঠন করেছেন। একইসাথে, মুসলিম-বিরোধিতা নিয়েও অনুসন্ধান হয়েছে বলে জানান তিনি।
ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত এই প্রখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ই একমাত্র নয়—যেটি ফেডারেল তহবিল হারানোর মুখে পড়েছে। কর্নেল ইউনিভার্সিটির এক বিলিয়ন এবং ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ৫১০ মিলিয়ন ডলার তহবিল স্থগিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি—যেটি গত বছর ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল—কিছু শর্ত মেনে নেওয়ায় তাদের ৪০০ মিলিয়ন ডলার তহবিল মুক্ত রাখা হয়েছে।
হার্ভার্ডের কাছে সরকারের দাবি ছিল, বাইরের নিরীক্ষকের মাধ্যমে পাঠ্যক্রম, শিক্ষক নিয়োগ এবং ভর্তি প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ। হার্ভার্ড তা প্রত্যাখ্যান করে জানায়, “বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার কখনোই ত্যাগ করবে না।”
হার্ভার্ডের সাবেক শিক্ষার্থী ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বিশ্ববিদ্যালয়টির পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন